Blogge

See All Blogge

সৃষ্টি সেরা জীব হিসাবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ।

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীবঃ মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আরশাফুল মাকলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে। আর সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে আমাদের রয়েছে অনেক দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য মানব জীবনে যতগুলো সৎ গুনাবলী রয়েছে তার মধ্যে দায়িত্বশীলতা অন্যতম। সবার উপরে অরর্পিত থাকে কোনো না কোনো দায়িত্ব। কিন্ত সবাই সমান দায়িত্বশীল নয়। দায়িত্বশীলতা এটা জন্মগত, এটা সাথে নিয়েই মানুষ জন্মগ্রহন করে এবং সারা জীবন তাকে এটা বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়। মানুষ হিসেবে আমাদের উপর অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। এই দায়িত্ব ও কর্তব্য সর্ম্পকে সচেতন থাকা , সমায়মত যথাযথ দায়িত্ব পালন করা এবং এক্ষেত্রে কোন ধরণের অবহেলা বা উদাসীনতা প্রদর্শন না করাই দায়িত্বশীলতা বা কর্তব্য পরায়নতা। এই সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তা দিয়ে পরকালে ঘর তৈরি কর। দুনয়িার লোকের প্রতি তোমাদের দায়িত্বের কথা ভুলে যেওনা । মানুষের উপকার করো যেমন আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। ( আল কাসাস-০৭ ) আর এই দায়িত্বশীলতা মানুষকে উঠাতে পারে অনন্য উচ্ছতায়। আবার দায়িত্বহীনতা বা দায়িত্বর প্রতি অবহেলা মানুষ কে পেলে দিতে পারে অধঃপতনের গভির অতলে। এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন প্রতেকে যা করে তদনুসারে তার স্থান রয়েছে। এবং তারা যা করে সে সম্পার্কে তোমাদের পতিপালক অমনযগী নন। ( সূরা আনআম -১৩২ ) এই সম্পর্কে রাসুল (সঃ) বলেছেন, তোমাদের প্রতেকেই দায়িত্বশিল আর তোমাদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে জিঙ্গাসিত হবে। (বুখারি-০৪) তাই আমাদের সবার উচিৎ দায়িত্বের প্রতি সচেতনতা হাওয়া। যদি আমরা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হই বা অবহেলা করি। তাহলে কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হব। আর যদি আমরা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি তাহলে মানুষের আসল মুক্তি ও কল্যাণ ফিরে আসবে। কিন্তু বর্তমানে মানুষের মধ্যে এ বুঝ সৃষ্টি হচ্ছে না।

১. ব্যক্তিগত  জীবনে দ্বায়িত্বঃ আল্লাহর পরিচয় জানা মানুষের প্রধান দায়িত্ব

মহান আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে মানুষের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো তাঁর স্রষ্টার পরিচয় জানা। আর আল্লাহর পরিচয় লাভের ওপর নির্ভর করছে ব্যক্তির ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য। এই সাফল্যের কথাই ব্যক্ত হয়েছে মহানবী (সা.)-এর হাদিসে। তিনি বলেন, ‘যে এমন অবস্থায় মারা গেল যে সে জানে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬) আর পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘জেনে রেখো! আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। ক্ষমা প্রার্থনা কোরো তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং অবস্থান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। ’ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৯) আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যা লেখেন, ‘আল্লাহর একত্ববাদের জ্ঞান লাভ করা একটি স্বতন্ত্র ও সত্তাগত আদিষ্ট বিষয়। যদিও এটা মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে এক আল্লাহর ইবাদত করাও অপরিহার্য। উভয় বিষয়ে বান্দা আদিষ্ট। আল্লাহর পরিচয় লাভের অর্থ হলো তাঁর নাম, গুণাবলি, কাজ ও বিধান সম্পর্কে জানা। ইবাদতের অর্থ হলো নির্দেশ ও নির্দেশনা মোতাবেক ইবাদত করা। ’ (মিফতাহু দারুস সাআদাহ : ১/১৭৮) যেহেতু বান্দার মুক্তি ও সাফল্য আল্লাহর পরিচয় লাভের ওপর নির্ভর করে, তাই সব নবী ও রাসুল (আ.) মানুষকে আল্লাহর পরিচয় দান করেছেন এবং তাদের পরিচয় লাভের পথে আহ্বান করেছেন। বিশেষত মহানবী (সা.) এই আহ্বান জানিয়েছেন। আল্লামা আবুল হাসান আশআরি (রহ.) বলেন, ‘আলেমরা এ বিষয়ে একমত যে নবী (সা.) সমগ্র সৃষ্টি জগেক আল্লাহর পরিচয় লাভের আহ্বান জানিয়েছেন। ’ (রিসালাতুন ইলা আহলিস সুগার, পৃষ্ঠা ১৫৪) আর যারা আল্লাহ ও তাঁর পরিচয় লাভের ব্যাপারে বিমুখ থাকে, তাদের ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘বোলো, আমি কি তোমাদের সংবাদ দেব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের? তারা হলো সেসব মানুষ, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে তারা সৎকাজই করছে। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১০৩-১০৪) পবিত্র কোরআনের কমপক্ষে তিন শ আয়াতে পরিচয় লাভ ও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। ’ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৯) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জেনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের অভিভাবক। ’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ৪০) আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তোমরা তার প্রতি লক্ষ্য কোরো। ’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ১০১)

নিজের জন্য কাজ করা অর্থাৎ নিজের দেহের জত্ন নেওয়া ।

আমরা সাধারনত বলে থাকি আমার হাত, আমার চোখ, আমার নাক, আমার মাথা, আমার পা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সবই যদি আমার হয়। তাহলে আমি টা কে ? আমি টা হচ্ছে দেহর ভিতর থাকা আত্তা বা রুহু। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন আমি তাকে (আদম আঃ) সুষম করবো এবং তাতে আমাদের রুহ ফুকে দেব। তখন তোমরা তার সম্মুখে সেজদায় নত হয়ে যেয়ো। ( সূরা সাদ -৭২ ) মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন মাটি থেকে। অতঃপর মাটির নির্যাস থেকে যা এক অপবিত্র পানি তাঁর বংশধারা চালিয়েছেন তৎপর তার গঠন কার্য ঠিক করেছেন এবং তার ভেতরে আপন রূহ ফুকে দিয়েছেন। ( সূরা সিজদাহ ) কেয়ামতের সময় আত্না এবং দেহকে একত্রিত করা হবে। যখন আত্নারসমূহকে যুগল করা হবে ( সূরা আত-তাকৃইরঃ-৮১/০৭ ) উপরক্ত আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারলাম মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই সুন্দর দেহ দান করেছেন। তাই এই দেহের যত্ন নেওয়া আমার দায়িত্ব। এই দেহের সুস্থতার জন্য কাজ করাও আমার দায়িত্ব।

নিজের যোগ্যতার বিকাশ ঘটানো অর্থাৎ নিজের সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলা ।

এই মহাবিশ্বের সব থেকে বিস্ময়কর সৃষ্টি হল মানুষ। আর মানবদেহের সবথেকে বিস্ময়কর সৃষ্টি হল। তার মস্তিষ্ক। প্রত্যেক মানুষ কিছু না কিছু প্রতিবার রয়েছে। তার নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে নিজের প্রতিভাকে বিকশিত করা বা নিজের যোগ্যতার প্রমান করা আমাদের দায়িত্ব । আর তার জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করা। তাই আমাদের সবার উচিৎ জ্ঞান অর্জন করা।